কাজী সাঈদ ॥ আ’লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই বরিশাল-৪ আসনের হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এলাকার বাইরে থাকায় অভিভাবকহীন হয়ে পরে দলটির নেতাকর্মীরা। বিএনপি নেতাদের খুঁজতে দলের সাধারন নেতাকর্মীদের যেতে হয় বরিশালে কিংবা ঢাকায়। ফলে এ আসনে দলের সাংগঠনিক অবস্থার ব্যাপক অবনতি ঘটে। অসহায় হয়ে পরে দলের নেতাকর্মীরা। দলের এমন ক্রান্তিকালে হিজলার কৃতি সন্তান দলের পরীক্ষিত নেতা আলহাজ্ব এসএম মিজানুর রহমান অহিদের দ্বারস্থ হন হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। তাদের প্রবল চাপে অহিদও নিজ এলাকায় ফিরতে বাধ্য হন। নেতাকর্মীদের আহবানে অহিদ হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় বেশ কয়েকমাস যাবত সভা-সমাবেশ, সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ ব্যাপক গণসংযোগ করেন। আর এতে করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে ঝিমিয়ে পরা দলের নেতাকর্মীরা। দলের নেতাকর্মীরা জানায়, দীর্ঘদিন পরে পদধারী দূর্বল নেতৃত্বের কারনে অসহায় হয়ে পরা দলের মিজানুর রহমান অহিদ হাল ধরায় হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নেতাকর্মীরা বেশ উজ্জীবিত। দলের সাংগঠনিক অবস্থাও পূর্বের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। তারা বলেন, দলের দ্বায়িত্ব নিয়ে যারা এলাকায় থাকেন না, দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ রাখেন না তাদেরকে আমরা চাইনা। দলের ক্রান্তিকালে যেসব নেতারা সাধারন নেতাকর্মীদের পাশে থাকেন তারাই দলের পরীক্ষিত নেতা। আর এক্ষেত্রে আমাদের পরীক্ষিত নেতাই হলো এখন মিজানুর রহমান অহিদ।
হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ এই দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত বরিশাল-৪ আসন। হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নিপেড়িত নির্যাতিত অভিভাবকহীন দলীয় নেতাকর্মীরা অতিত ও বর্তমান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে জানান, আমরা শাহ আবুল হোসাইনকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার পর তাকে বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়া অর্থপ্রতিমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। এরপর তিনি জনবিচ্ছন্ন, খুজে পাওয়া মুশকিল। তিনি আমাদের ভুলে সব সময় ঢাকাতেই অবস্থান করেন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত এলাকার দলীয় নেতাকর্মীসহ জনবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন তিনি। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে দেখা মেলে তার। তার এহেন দৈন্যদশা দেখে পরবর্তীতে দলীয় মনোনয়নে নির্বাচিত হন বসন্তের কোকিল খ্যাত মেজবাউদ্দিন ফরহাদ। নির্বাচিত হওয়ার পর গুটি কয়েক নেতা নিয়ে পদযাত্রা তার। জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরেন তিনিও। দলীয় সব কর্মসূচী পালন করেন বরিশাল দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এবায়েদুল হক চানের সাথে। এতে ফরহাদের কোন ঝামেলা পোহাতে হয়না। পাশাপাশি কোন কর্মসূচীতে অর্থ ব্যয় করতে হয়না তাকে। দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতাকর্মী, এক মাইক ও এক ব্যানারেই সেরে ফেলেন দলীয় সব কর্মসূচী। এভাবেই মেজবাউদ্দিন ফরহাদ বছরের পর বছর ধরে পালন করে আসছেন হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সব কর্মসূচী। ফলে তিনিও তার নির্বাচনী এলাকায় জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছেন। দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে কিংবা দলীয় কোন কর্মসূচীতে মেজবাউদ্দিন ফরহাদকে নির্বাচনী এলাকায় কোনভাবেই খুঁজে পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। দলের নেতাকর্মীদের ছেড়ে সব সময় বরিশাল ও ঢাকাতেই থাকেন তিনি। শাহ আবুল হোসাইন’র দর্শন পেতে যেতে হয় ঢাকায়। আর মেজবাউদ্দিন ফরহাদের দর্শন পেতে হলে ৩/৪ ঘন্টার নদী পাড়ি দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের যেতে হয় বরিশালে কিংবা ঢাকাতে। দলীয় কোন কর্মসূচী কিংবা আন্দোলন সংগ্রামেও খুঁজে পাওয়া যায় না তাদের। উপজেলা বিএনপির পদধারী নেতারাও থাকেন নেতাকর্মীদের নাগালের বাইরে। অভিযোগ রয়েছে, সরকার দলীয় মামলা-হামলার শিকার নেতাকর্মীরা ফরহাদের কাছ থেকে নুণ্যতম সাহায্য সহযোগিতা থেকেও রয়েছেন বঞ্চিত। পরিস্থিতি এমনই যে, দলের হাল ধরার মত নতুন করে কোন নেতা খুঁজে পাচ্ছিলেন না হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার নেতাকর্মীরা। দলের এমন ক্রান্তিকালে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নিপেড়িত নির্যাতিত অভিভাবকহীন দলীয় নেতাকর্মীরা ঘরের ছেলে আলহাজ্ব মিজানুর রহমান অহিদকে ঘরে ফিরিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। নাছোরবান্দা নেতাকর্মীরা অবশেষে হিজলার সন্তান আলহাজ্ব এসএম মিজানুর রহমান অহিদকে বিএনপির হাল ধরতে এলাকায় যেতে বাধ্য করেন।
হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির অবহেলিত নেতাকর্মীরা জানায়, মিজানুর রহমান অহিদ আমাদের এলাকার সন্তান, দলের ও হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাবাসীর পরীক্ষিত নেতা। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির একাধীক নেতা জানায়, এতদিন যাদেরকে ভোট দিয়ে নেতা-এমপি বানিয়েছি পরবর্তীতে তাদেরকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না। অথচ আমাদের যে কোন বিপদ-আপদ, সুবিধে-অসুবিধে, সুখ-দুঃখে সব সময়ই পাশে পেয়েছি বরিশাল বিএনপির অভিভাবক কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ারের ছোট ভাই আলহাজ্ব এসএম মিজানুর রহমান অহিদকে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের কোন নেতা না হয়েও অহিদ বিগত দিনে আমাদের পাশে থেকে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন। নেতাকর্মীদের কখনও তাদের কাছ থেকে নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়নি। নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারন মানুষের বিপদ-আপদে ঝাপিয়ে পরেন তারা। আজ সময় এসেছে তাদেরকে (সরোয়ার-অহিদ) কিছু দেয়ার। তারা বলেন, দলের হাইকমান্ড আলহাজ্ব মিজানুর রহমান অহিদকে কিভাবে মুল্যায়ন করবে জানিনা। আগামী নির্বাচনে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাবাসী মুল্যায়ন করতে ভুল করবে না।
হিজলার গৌরব্দী ইউনিয়নের মরহুম সৈয়দুর রহমানের ছোট ছেলে ও বরিশাল বিএনপির অভিভাবক কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ারের ছোট ভাই আলহাজ্ব এসএম মিজানুর রহমান অহিদ। আর এ কারনেই হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ আসনের দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষের অভিভাবক হিসেবে সবাই অহিদকে পেতে চায়। মিজানুর রহমান অহিদ বর্তমানে বরিশাল মহানগর বিএনপির গ্রাম বিষয়ক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা ও মহানগর অটোটেম্পু-মিশুক-আলফা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি। বিএনপির রাজনীতিতে পদ পদবীর লোভ-লালসা ছেড়ে বড় ভাইকে সহযোগিতা করাই ছিল অহিদের প্রধান কাজ। দলে তার ত্যাগ, নির্যাতন, নিপিড়ন, হামলা-মামলা কোন কিছু থেকেই রেহাই পাননি তিনি। পৈত্রিক বাড়ী হিজলায় হওয়ার কারনে সব সময় বরিশালসহ হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার বিএনপি নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন অহিদ। বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আলহাজ্ব মিজানুর রহমান অহিদ বলেন, জন্মের পর থেকেই বিএনপির রাজনীতি করে আসছি এখনও করছি। আমার রক্তের সাথে বিএনপি মিশে গেছে। সারাজীবন যতটুকু পেরেছি দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারন মানুষের সেবা করেছি। মানুষ আমাকে এত ভালবাসে হিজলা ও মেহেন্দিগঞ্জে না আসলে হয়ত সবকিছু আমার অজানাই থেকে যেত। যে ভালবাসা হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জবাসী আমাকে দিয়েছে। যে ভালবাসার বন্ধনে আমাকে আবদ্ধ করে রেখেছে। আমার জীবনে আর কিছু চাওয়া পাওয়ার নাই। যতদিন বেঁচে আছি দলের একজন খাদেম হয়ে হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাবাসীর আমৃত সেবা করে যেতে চাই। হজ্ব করেছি এখন মানুষের কল্যাণে কাজ করে বাকি জীবন কাটাতে চাই। আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বলেন, বিএনপি জনগনের দল, দল এবং জনগন চাইলে প্রার্থী হওয়া তো সময়ের ব্যাপার।
Leave a Reply